বরগুনা প্রতিনিধিঃ
বরগুনায় এক যুবতী নারীর গোপনাঙ্গে মরিচগুঁড়া ও কচু দিয়ে বিকৃতভাবে নির্যাতন এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পশুয়া গ্রামে নারীর পরকীয়া প্রেমিকের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। পরে তাকে বরগুনা সদর হাসপাতালে রাত নয়টায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের আয়লা বাজারে ভাড়া করে স্বামীর সঙ্গে দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছে। এই ঘটনার অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম বাবুল মৃধা। সম্পর্কে তার মামা হলেও তার পরকীয়া প্রেমিক। বাবুল মৃধা ঢাকায় একটি ঔষধ কোম্পানিতে চাকুরী করে।
গত ২০১৮ সালে তাকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং তা ভিডিও ধারণ করে। এরপর থেকে ভিডিও দেখিয়ে প্রায় সে তার সঙ্গে সম্পর্ক করে আসছে। এমনকি এই ভিডিও যাতে প্রকাশ না করে সেজন্য প্রায় সময়ই বাবুল মৃধাকে ঘটনা ধামাচাপা রাখতে টাকা দিত বলে জানান এই ভুক্তভোগী নারী। এব্যাপারে গত ৭ অক্টোবর এই ব্যাপারে বরগুনা থানায় একটি অভিযোগ দিলেও বরগুনা থানা পুলিশ কোন ব্যবস্হা নেয় নাই।
অভিযুক্ত নারী আরো বলেন, গত শুক্রবার ২১ অক্টোবর বাবুল মৃধা ঢাকার রামপুরায় তার ভাড়াটিয়া মেসের রুমে বেড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে বসে তারসঙ্গে একাধিক শারীরিক সম্পর্ক স্হাপন করে এবং ভিডিও ধারণ করে। গত ২৩ অক্টোবর সকালে তারা আবার ঢাকা থেকে ফিরে আসে। আসারপর ভিডিও ডিলিট করতে বললে সে টাকার জন্য চাপ দেয় এবং সাদা রেফ কাগজে সই সাক্ষর রাখে। পুনরায় ভিডিও ডিলিট করতে বললে মঙ্গলবার বিকেলে বাবুল মৃধা ও তার স্ত্রী, মা বোন এবং ভাগ্নি মিলে আমাকে টানা হ্যাচরা করে এবং কোমরের নীচ থেকে রানে পিটাতে থাকে। একপর্যায়ে আমার গোপনাঙ্গে মরিচগুঁড়া ছিটিয়ে দেয় এবং কচু দিয়ে আঘাত করে। এসময় তার টাকা ও মোবাইল সব রেখে দেয়ার অভিযোগ করেন অভিযুক্ত নারী।
বরগুনা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ কায়েস উদ্দিন আহমেদ জানান, রাত ৯টা ৭ মিনিটের সময় একজন নারী বয়স (২৭) তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। তার শরীরের পিছনে কোমর থেকে বাম পায়ের হাটু পযর্ন্ত কালো দাগ দেখা গেছে। সামনের পায়ে চামড়া ছিড়ে রক্ত বের হতে দেখা গেছে। তিনি দাবী করেণ শরীরের গোপনাঙ্গে মরিচগুঁড়া ছিটিয়ে দিছে যা কর্তব্যরত আয়া দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে দেয়া হয়েছে। তাকে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশনা দেই এবং বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহমেদ বলেন, গত ৭ অক্টোবর সীমা আক্তার নামে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আসলে ঘটনাটি উপ পুলিশ পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন কে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেই। পুলিশ তদন্তের জন্য গেলে ঐ নারীর আপন মামা বিষয়টি শালিষ ব্যবস্হা করবে বলে ঐ নারী সহ থানায় এসে অনুরোধ করলে তাদের সম্মতিতেই বিষয়টি নিস্পত্তি করতে দেই। পরবর্তীকালে শুনি ঐ নারী টাকা পয়সা নিয়ে ঘটনার মিমাংসিত হয়। তার যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্হা নিব।
এব্যাপারে অভিযুক্ত বাবুল মৃধার ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনা সম্পর্কে স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বলেন এই ঘটনা শুনেছেন এক নারীকে বাবুল মৃধার বাড়িতে বসে মারামারি ঘটনা হয়েছে তবে নারীর সঙ্গে অশ্লীলতা হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না। অভিযুক্ত ব্যক্তি বাবুল মৃধা ও ভুক্তভোগী নারীর ঘটনা নিয়ে বিগত দিনেও শালিষ বিচার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
News Desk/ WE