বরগুনায় বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পরপরই তালা লাগিয়ে লাপাত্তা ওই হাসপাতালে কর্মরত নার্স ও চিকিৎসকরা।
হাসপাতালটির নাম কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
বরগুনা সদরের মহাসড়ক এলাকায় এটি অবস্থিত। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, সদর উপজেলার বদরখালী এলাকার তানজিলা পুতুল নামে এক প্রসূতি ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। মঙ্গলবার বিকালে সিজারের মাধ্যমে এক নবজাতকের জন্ম দেন তিনি।
তবে অপারেশন শেষ হলেও জ্ঞান ফেরেনি প্রসূতির। এরপর বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মধ্যরাতের দিকে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।
এরপর থেকে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এঘটনার পর বুধবার সকাল থেকেই হাসপাতালে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে হাসপাতালটির মালিক ও স্টাফরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায়ই এখনে ভুল চিকিৎসায় কোন না কোন প্রসূতি মারা যায়। একারনে এবছর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স নবায়ন করেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। এতকিছুর পরেও বহাল তবিয়তে চলছে হাসপাতালটির কার্যক্রম। ভুল চিকিৎসার কারণে আর যেন কোন রোগীর মৃত্যু না হয় সেজন্য হাসপাতালটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
তানজিলা পুতুলের স্বামী মো. শিমুল বলেন, আমরা আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার পস্তুতি নিচ্ছি।
জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, বহুবার ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এই হাসপাতালে। কয়েক বছর আগে এখানে ভর্তি এক নবজাতক চুরি করে বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পরে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার। তবু্ও এদের কেন আইনের আওতায় নিচ্ছে না প্রশাসন, বুঝতে পেরেছি না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে সাধারণ মানুষের দাবি যাতে সুষ্ঠু তদন্ত করে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে বরগুনা কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ফজলুল হক মন্টুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, হাসপাতালটির বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক বার ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ছিল। আমি দায়িত্বে আসার পর এখানে ডেলিভারির সময় এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। ওই বিষয়টি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি। তিনি বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছেন। শিগগিরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে এবং বর্তমান ঘটনাটিও তদন্ত করে দেখছি।