বরগুনাঃ সরকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের করতে ৫০ লাখ টাকা পযন্ত ভ্যাটমুক্ত ঘোষনা দিলেও বরগুনায় ভয় দেখিয়ে ব্যপক চাঁদাবাজি করছে বরগুনা ভ্যাট অফিসের কর্মচারী কর্মকর্তারা। শহরের প্রায় সকল ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে চলছে ঘুষ গ্রহন। সরকারী কোষাগারে ভ্যাট প্রদানের পরেও অফিসে গিয়ে তাদের আলাদা টাকা দিতে হচ্ছে ।
শহরের নজরুল ইসলাম সড়কের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী ইসলামীয়া হার্ডওয়ারের জাহিদ মিয়া জানান, আমাকে ১৪ হাজার টাকা ভ্যাট নির্ধারন করে জমা দিতে বলেন , টাকা জমা দেয়ার পরে ভ্যাট অফিসের সিপাহী এসএম সালাউদ্দিন দাবী করেন আরও বিশ হাজার টাকা অফিস খরচ হিসেবে দিতে হবে। বারবার ফোন করে অফিসে আসতে চাপ দিতে থাকে। আমি টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে আমাকে দেখিয়ে দিবেন বলে হুমকি দেন।
সাহাপট্টির সৌদিয়া সেনিটারী এন্ড হার্ডওয়ারের মালিক মোহম্মদ আবু জাফর বলেন , আমাকে ৫ হাজার টাকা জমা দিতে বলার পরে আমি জমা দিয়ে নিবন্ধন করি এরসাথে আরও ৩ হাজার টাকা তাদের ঘুষ দিতে হয়। অন্যথায় তারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে ফাসিয়ে দিবেন বলে ভয় দেখায় তাই আমি নগদ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি। সদর রোডের বেলায়েত ষ্টোরের সত্বাধিকারী ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া বলেন আমাকে ৬০ হাজার টাকা ভ্যাট নির্ধারন করে ভয় দেখিয়ে আমাদের ৪ জন ব্যবসায়ীকে অফিসে ডেকে ২১ হাজার টাকা ঘুষ নেন সিপাহী এসএম সালাউদ্দিন এরপর প্রতিমাসে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে এক হাজার করে টাকা জমা দিতে বলেন। ঘুষ না দিলে না দিলে ক্ষতি করার হুমকি দেন।
শহরের বালিকা বিদ্যালয় সড়কের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের সামান্য বেচাকিনা ভ্যাটের আওতায় পড়েনা তবুও সবার কাছ থেকে নিবন্ধন না থকলে ও টাকা দিতে হচ্ছে। বরগুনা গার্মেন্টস পট্টির ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় ৫০ টি দোকান থেকে আমাদের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকা করে উঠিয়ে নেয় ভ্যাট অফিস কিন্তু কয়েকটি দোকান ছাড়া এখনও আমাদের টাকা জমা দেয়ার রশিদ অথবা নিবন্ধন করার কাগজ পাইনি। সদর রোডের ফার্নিচার ব্যবসায়ী মেসাস ঢাকা ডেরের মালিক মো: খলিলুর রহমান মামুন ও সাফি ফার্নিচারের মো: জাবিদ হোসেন মুরাদ বলেন, সমিতির মাধ্যমে আমাদের অনেকগুলো দোকান থেকে প্রত্যেক দোকান থেকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা ভ্যাট দেয়ার নামে উত্তোলন করা হয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো রশিদ পাইনি।
বালিকা বিদ্যালয় সড়কের রাব্বি ইলেকট্রিকের সত্বাধিকারী মহসিন মিয়া জানান, সমিতির মাধ্যমে ভ্যাটের নামে দুই জাজার করে প্রত্যেক দোকান থেকে টকা উত্তোলন করা হয়েছে আমরা কোনো কাগজ পইনি।
বৈদ্যুতিক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন জানান, কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াও ভ্যাট অফিস থেকে চাপ দিচ্ছে । কারও কাছ থেকে দুই হাজার কারও কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ওয়েব সাইটের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২য় অধ্যায়ে বলা আছে, অর্থনৈতিক কার্যক্রমের টানওভার প্রতি ১২(বার) মাস সময়ে ৮০ লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে নিবন্ধন এবং অথনৈতিক কাযক্রমের টানওভার প্রতি ১২ মাস সময়ে ৩০ লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে তালিকাভুক্তির আবশ্যকতা উদ্ধুত হয়। নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির অব্যশকতা উদ্ধুতহবার ১৫(পনের) দিন অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্ত করতে হবে। কিন্তু শহরের অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকেও ভ্যাটের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বাদ যায়নি সামান্য মেকার সমিতির লোকজন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, আমাদের সামান্য বেচাকিনা করনার কারনে ঘর ভাড়া, ব্যাংক লোন, এনজিওর কিস্তি দিতে বিপযস্ত আমরা এর উপরে ভ্যাট অফিসের চাপে আমরা আতংকিত অবস্থায় আছি।
এ বিষয়ে বরগুনা চেম্বার অব কমাস এন্ড ইন্ড্রাট্রির সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির বলেন, সরকারী আইনে যারা ভ্যাটের আওতায় আসবে তারা ভ্যাট দিবে। ভ্যাটের বাইরে অতিররিক্ত টাকা ব্যবসায়ীরা কেন দিচ্ছে এটা খোজ নিতে হবে। অভিযোগের বিষয়ে ভ্যাট অফিসের সিপাহী এসএম সালাউদ্দিন বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। আমরা যাদের ভ্যাট দিতে বলছি তারা অফিসে এস বলতে পারে আমরা যা ধায্য করেছি সঠিক না । আপনাদের কাছে কেন অভিযোগ দিচ্ছে? এমন পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি। ঘুষের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো প্রকার টাকা পয়সা নিচ্ছি না।
এসব বিষয়ে বরগুনা রাজস্ব অফিসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি ব্রিক ফিল্ডে আছি সাক্ষাতে কথা বলবো।
এবি