বরগুনা প্রতিনিধিঃ
তালতলীতে জাল চুক্তি পত্র তৈরি করে রাখাইনদের দখল ও হামলার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার প্রতিবাদে বরগুনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে রাখাইন পরিবার।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার সময় বরগুনা প্রেসক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে তাদের লিখিত অভিযোগ বক্তব্য পাঠ করেন সন্ত্রাসী হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যগণ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান ও মং তাহান এর পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, আমি মোঃ নাজমুল হাসান চুন্নু অদ্য বরগুনা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হইয়া লিখিত ভাবে জানাইতেছি যে, আমাদের নিম্ন তফশিল বর্ণিত কবলাকৃত জমিতে বরগুনা জেলার তালতলী থানার বড় অংকুজান পাড়া গ্রামের জনৈক আলমগীর ও তার ছেলে রাসেল এর নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী অন- অধিকার প্রবেশ করে আমাদের রোপনকৃত জমিতে ট্রিলার মেশিন দিয়া চাষ করিতে থাকে। আমি খবর পাইয়া জমিতে গিয়া তাদের বাঁধা নিষেধ করিলে সকল বিবাদীরা তাদের হাতে থাকা দাড়ালো অস্ত্র দিয়া
আঘাত করে। এতে আমাদের পক্ষের তারেক, খাইরুল ও রোজিনা গুরতর আহত হয়। তাদেরকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়।
প্রিয় সাংবাদিক বৃন্দ এ ব্যাপারে আমরা তালতলী থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আমাদের মামলা না নেওয়ায় আমার
স্ত্রী নাজমা বেগম বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করে।
আদালত উক্ত মামলাটি এফআইআর হিসাবে গন্য করার জন্য ওসি তালতলী থানাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য বিবাদীরা আমাদের আঘাত করার পরে তারা নিজেরা মিথ্যা মিথ্যি আঘাত সৃষ্টি করে আমাদের ১৪ জন আসামী করে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় ইতো মধ্যে আমরা জামিন লাভ করেছি।
ভাইয়েরা তালতলী উপজেলার কথিত হাইরাজ মাঝি এবং মনির মাঝির অত্যাচারে আমারা অতিষ্ট। তাদের ভগ্নিপতি রাসেল। উক্ত রাসেল হাইরাজ মাঝির ছত্র ছায়ায় আমাদেরকে নানা ভাবে হয়রানী করতেছে। আমাদের কবলাকৃত জমিতে ভোগদখলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতেছে।
এই রাসেল ইতোপূর্বে তালতলী রাখাইন সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তি মং তাহান এর স্বাক্ষর জাল করে ৪.৬৫ (চার একর পয়ষট্টি শতাংশ) মাছের ঘেরে এই রাসেল একটি জাল চুক্তি পত্র তৈরী করে। জনাব মং তাহান এ ব্যাপারে উক্ত জাল চুক্তি পত্রের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তালতলী থানায় মামলা দায়ের করে। যাহার জি, আর নং ৮৫/২১। উক্ত মামলায় হস্তরেখা বিশারদ এর মাধ্যমে জাল স্বাক্ষরের সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় সিআইডি রাসেল সহ ৪ জনের নামে চার্জশীট প্রদান করে। এ মামলার ১নং আসামী রাসেল দীর্ঘ দিন হাজত খাটার পরে জামিন প্রাপ্ত হয়।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা নিম্ন তফশিল বর্নিত সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক তালতলী রাখাইন সম্প্রদায়ের মংতাহান এর স্ত্রী মাখান চিৎ।
তাহার নিকট হইতে ৪.০০ একর জমি কবলা সূত্রে মালিক আমরা এবং অবশিষ্ট ৪.৬৫ একর জমি মংতাহান এর নিকট থেকে লিজ গ্রহন করেন আমার স্ত্রী নাজমা বেগম। বিবাদীরা আমাদের ৮.৬৫ একর জমিতেই প্রবেশ করতে বাধা দিতেছে। তারা জোড় পূর্বক দখলে নেওয়ার পায়তারা করিতেছে।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা এই আলমগীর এবং রাসেল গংরা একটি জালিয়াত চক্র। তাদের কোন স্বত্ত্ব দখল না থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ন গায়ের জোড়ে আমাদের কবলাকৃত জমিতে প্রবেশ করিয়া দখল নেওয়ার চেষ্টা করিলে আমরা বাধা দেই। উক্ত বিবাদীরা আমাদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে।
আমি নাজমুল হাসান চুন্নু বাদী হয়ে মোকাম সহকারী জজ আমতলী আদালতে দেওয়ানী ১৪/২২ মামলা দায়ের করিলে আদালত আমার পক্ষে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করে। বিবাদীগন উক্ত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করিয়া জমিতে প্রবেশ করে এবং আমাদের মারপিট করে।
এ ব্যাপারে সন্ত্রাসী ও জালিয়াত চক্রের মুখোশ উম্মেচন করে প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর করার জন্য অনুরোধ করছি।
News Desk/ WE