বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি ও পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির বাচ্ছুকে কৌশলে এক নারীকে দিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপন আদায়ের জন্য মারধোরের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার রাত নয়টার দিকে তার নিখোজ হবার খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রবিবার সাড়ে নয়টার দিকে তার স্ত্রী মিনারা নিশি ও আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম শিকদার সহ এলাকাবাসী থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকটি দল তাকে খোজার চেষ্টা শুরু করে। এ সময় ৯ টা ৪৬ মিনিট পযন্ত তার মুঠোফোনের লোকেশন বরগুনা স্টেডিয়ামের অশেপাশে দেখা যায় বলে নিশ্চিত করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।
তার স্ত্রী মিনারা নিশি জানান, নয়টার দিকে তার ননদকে ফোন করে তার স্বামী এক লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে বলেন, পরে তিনি তার স্বামীকে ফোন দিলে তিনি জানান , আমাকে বাচাতে চাইলে এখনি এক লক্ষ টাকা দিয়ে চেম্বারের কাছে আসো। তিনি গিয়ে চেম্বার ও তার মুঠোফোন বন্ধ পান। এমনকি তার ব্যবহৃত ফেসবুকও ডিএক্টিভেট করে ফেলে জিম্মিকারীরা। পুলিশ সুপার এর নেতৃত্বে থানা পুলিশ ও ডিবির অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ অনুসন্ধান করতে থাকে পুলিশ। বরগুনা থেকে বের হবার বিভিন্ন পথে বসানো হয় চেক পোষ্ট।
রাত সাড়ে দশটার পরে আহত অবস্থায় অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির বাচ্ছু বাসায় ফিরে জানান, চেম্বার বন্ধ করার পরে একজন মুখচেনা লোক জানায় মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা আছে পরে তাকে ষ্টেডিয়াম এলাকায় নিয়ে যায় এরপর স্টেডিয়াম এলাকার শিশু পরিবার সংলগ্ন একটি ভবনের চার তলায় নিয়ে হঠাৎ একটি রুমে আটক করে এক নারীকে সহ তাকে বিবস্র করে ছবি তুলে মারধোর শুরু করে চার যুবক। এ সময় তার কাছে প্রথমে ১০ লক্ষ পরে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। তিনি তার স্ত্রীকে টাকা নিয়ে আসতে বললে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে তারা তাকে ছেড়ে পলিয়ে যায়।
মুক্ত পাওয়ার পরে তাকে সাথে নিয়ে ওই বাসায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ । ব্যাংক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের বাসার চার তলার ওই ফ্লাটে বাড়ির মালিকের ছেলে আরিফ একা থাকে বলে জানা যায়। তবে আরিফ জানায় তার কাছ থেকে পাশের ফ্লাটের শাহিন নামের এক লোক চাবি নিয়েছিল । শাহিন ওই সময় থেকে পলাতক। আরিফকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। রাতে চিকিৎসার জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি বরা হয় হুমায়ূন কবির বাচ্ছুকে।
গোয়েন্দা পুলিশের পরিদশক শহিদুল ইসলাম সোমবার সকালে জানান, বাড়ির মালিকের ছেলে আরিফকে তিনি সনাক্ত করতে না পারায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তার পাশের ফ্লাটের শাহিন সহ অন্যরা পলাতক । অভিযোগ দিলে তার প্রেক্ষিতে পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইতিপূর্বেও ওই ভবনের একই ফ্লাটে অন্য এক ব্যক্তিকে জিম্মি করে বরগুনা সদর থানার একজন এস আইয়ের মধ্যস্থতায় টাকা লেনদেন হয়েছিল বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমীক লীগ, আইনজীবী সমিতি নেতৃবৃন্দ বরগুনার সকল সচেতন মহল।
News Desk/WE