বরগুনাঃ এ সমাজে ভালো কাজ করতে গেলে অবশ্যই কষ্ট হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবুও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে আমাদের। আমাদের জানার ব্যাপারে অনেকটাই ঘাটতি আছে, তাই শিখতে হবে এবং প্রতিদিনই আমরা শিখছি। আর এই শেখার নির্যাস নিয়ে মানুষের সকল ধরনের মৌলিক চাহিদা পূরণে সহযোগিতা করব। প্রচলিত বিচারব্যবস্থায় সমাধান না হলে বিকল্প চিন্তা এসেছে। তিন লাইনের একটি আইন মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি মোঃ আশরাফুল কামাল।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে বরগুনা পৌরসভার হল রুমে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিআইএমএস) কর্তৃক আয়োজিত ওয়ার্কশপ অন মেডিয়েশন এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যে হারে মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে তার তুলনায় নিষ্পত্তি ত্রিশ বছরের অধিক পিছিয়ে রয়েছে। তাই বুদ্ধিদীপ্ত জ্ঞান দিয়ে সততা ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে এ ধরনের মামলা উত্তরণের উপায় খুঁজতে হবে। মিডিয়েশনের মাধ্যমে সকল মামলার সমাধান করতে হবে। তিনি সালিশ আইন ২০০১ সংশোধন করারও আহ্বান জানান। কল্যাণকর কার্যের মাধ্যমে একটি উন্নত রাষ্ট্রের পরিণত করতে হবে বাংলাদেশকে। তাই অবশ্যই সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজেদের স্বার্থে আইন তৈরি করেছিলেন। তরুণ বিচারকদের সুযোগ করে দিলেই দেশের পরিবর্তন করতে পারবে। আমরা যদি কথা না বলি তাহলে জনগণ কিভাবে সুফল ভোগ করবেন। যে যার অবস্থান থেকে মেডিয়েশন বা সমঝোতাকারী হতে হবে। আমাদের দেশ আমাদেরই ভাবতে হবে আমরা গরিব না গরিব আমাদের মানসিকতা। এর অবশ্যই পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সমাধান হবে এমন বিষয় নিয়ে মামলায় না গিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করারও পরামর্শ দেন এই বিচারপতি।
বিআইএমএস এর থিম সং দিয়ে আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বিআইএমএস’র জেলার আহ্বায়ক ডেন্টিস (সার্জন) মনিজা। উদ্বোধনী ও সংগঠনের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, বিআইএমএস’র চেয়ারম্যান আইনজীবী ও একরিডেটেড মেডিয়েটর পঙ্কজ কুমার কুন্ডু।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বরগুনা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক তারিক বিন আনসারী সুমন এর সঞ্চালনায় আলোচনা করেন- সাবেক জেলা ও দায়রা জজ রোকসানা পারভীন বেনজু, বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ (নারী ও শিশু অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল) মোঃ মশিউর রহমান খান, পুলিশ সুপার মোঃ আবদুস ছালাম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মাহবুব আলম, পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, কমিউনিটি মেডিয়েশন সেন্টার (সিএমএস)’র চেয়ারম্যান সেলিমা সোবাহান খসরু, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার অনুতোষ বালা, জেষ্ঠ্য আইনজীবী মোঃ শাহজাহান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম সিকদার, বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট সঞ্জীব কুমার দাস, বিমস্ অ্যাম্বাসিডর বাংলাদেশ’র অমিয় প্রাপন চৌধুরী।
তারা সকলেই মেডিয়েশন বান্ধব সমাজ গঠন করতে নানা ধরনের পরামর্শমূলক আলোচনা করেন। মেডিয়েশন অথবা সমঝোতা যেভাবে একটি পরিবারকে সুন্দর ও স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে সহযোগিতা করবে, তেমনি মধ্যস্থতাকারীও মানসিক ও মনস্তত্ত্বের পরিস্ফুটিত হবে। বিচারপূর্বক মেডিয়েশন সমাজ জীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে, এমনকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলোচকবৃন্দ।
এবি