বরগুনায় এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে সাংবাদিকের দাবি, প্রস্তাব করা ঘুষ ফিরিয়ে দিয়ে দুর্নীতির সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করায় তার বিরুদ্ধে হায়রানির উদ্দেশে এই মামলা করা হয়েছে।
ওই সাংবাদিকের নাম ইমরান হোসেন টিটু। তিনি একাত্তর টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিং বিডি ডটকমের বরগুনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
গত পাঁচ এপ্রিল বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। পরে শুক্রবার (২২ জুলাই) বিষয়টি জানাজানি হয়।
পরে এই মামলাকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রাসহ বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বরগুনা রিপোর্টার্স ইউনিটি, আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন, আমতলী প্রেসক্লাব, তালতলী প্রেসক্লাব, তালতলী সাংবাদিক ফোরাম, বরগুনা জেলা অনলাইন সাংবাদিক ফোরাম ও মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাব।
জানা যায়, চলতি বছরের এক মার্চ একাত্তর টেলিভিশনে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইয়ার উদ্দিন খলিফার মাজারের দুর্নীতি নিয়ে ইমরান হোসেন টিটুর অনুসন্ধানী রিপোর্ট একাত্তর টিভিতে প্রচার হয়।
এ বিষয়ে সাংবাদিক টিটু বলেন, প্রতিবেদন করার সময় বাদল নামে একজন গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে আমার বরগুনা অফিসে দেখা করতে আসেন। এ সময়ে তিনি প্রতিবেদন বন্ধ করার জন্য ঘুষের প্রস্তাব দেন। আমি এসব কথোপকথন ভিডিও রেকর্ড করে প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত করে প্রচার করি। এর একমাস পরে বাদল বাদি হয়ে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে আমার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। গতকাল রাতে আমি একটি সূত্রের মাধ্যমে মামলার বিষয়ে জানতে পারি।
টিটু বলেন, আমি তদন্তকারী পুলিশ প্রশাসনসহ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। আশা করি পুলিশ সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে এবং মামলা থেকে আমি মুক্তি পাবো
বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেন ফসল বলেন, এই মামলা হয়রানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর আগেও সাংবাদিক টিটু বিভিন্ন দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। মামলা করে কখনোই সাংবাদিকদের লেখা বন্ধ করা যায়নি, যাবেও না।
তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লক্ষে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে।
মির্জাগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সাদ্দাম একাত্তরকে বলেন, কথিত সাংবাদিক বাদল বিগত দিনে বিভিন্ন সময়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। তার চাঁদাবাজির একটি কল রেকর্ড অনেক আগেই ভাইরাল হয়েছে। নামধারী এই সাংবাদিকের মামলা প্রত্যাহার না করলে মির্জাগঞ্জ থেকে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।
এ বিষয়ে মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন তালুকদারকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।